একদিন রাজপুরোহিত নিজ গুপ্তচরের মাধ্যমে সংবাদ পেলেন যে, তেনালীরামের কুকুরটি মারা গেছে। তিনি মনে মনে তেনালীরামের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ফন্দী আটলেন। তিনি রাজাকে সংবাদ দিলেন....
হে রাজন, তেনালীরাম খুব কৃপণ, শুধুমাত্র কয়েকটি টাকা বাচাঁনের জন্য সে তার কুকুরটিকে ঠিক মতো খেতে না দিয়ে মেরে ফেলেছে। রাজা বললেন- কী! এটি অত্যন্ত খারাপ। তেনালীরামের শাস্তি পাওয়া উচিত। তৎক্ষাণাৎ তেনালীরামকে প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ পুরো মন্ত্রীসভাকে উৎকৃষ্ট ভোজ খাওয়ানোর কথা ঘোষণা করা হলো। কিন্তু দারিদ্রতার কারণে তেনালীরাম এত বড় খরচ অর্থ াৎ একশত টাকা মূল্যের সমপরিমাণ অর্থমূল্য বহন করতে অক্ষম ছিল।
তখন সিদ্ধান্ত হলো যে, রাজার কাছে থেকে উপহার স্বরূপ প্রাপ্ত রাজকীয় ঘোড়াটি বিক্রয় করে ভোজের খরচ যোগাতে হবে। এবং প্রকৃত প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ তেনালীরামকে প্রত্যহ বাড়ি থেকে পায়ে হেঁটে আসতে হবে।
রাজপুরোহিত জানত, ঘোড়ার মূল্য ভোজের খরচ অপেক্ষা অনেক বেশি। সেইজন্য সে চালাকি করে ঘোড়ার বিক্রয়মূল্য যা হবে তা সম্পূর্ণই সুদ-আসল সমেত দাবী করল। এরপর তেনালীরামের খরচে মন্ত্রীগণ এক উৎকৃষ্ট ভোজ খেল।
পরের দিন তেনালীরাম সেই রাজকীয় ঘোড়া এবং এক ঝুড়ি ফুল নিয়ে বাজারে এল। সে ঘোষণা করল যে, এই ফুলের ঝুড়ির দাম দুইশত টাকা। যে এই ফুলের ঝুড়ি ক্রয় করবে সে মাত্র এক টাকার বিনিময়ে ঘোড়াটি পাবে। চুক্তিটি সকলের কাছে খুবই লাভজনক মনে হলো এবং ফুলের ঝুড়িটি সত্ত্বর বিক্রি হয়ে গেল।
এরপর তেনালীরাম রাজপুরোহিতের দাবী মতো সেই ঘোড়াটির বিক্রয়মূল্য অর্তাৎ এক টাকা সুদ সমেত উৎকৃষ্ট ভোজের খরচ পরিশোধ করলেন। রাজপুরোহিত ভোজের জন্য একশত টাকা খরচ করেছিল এবং বিনিময়ে অনেক বেশি প্রাপ্তির আশা করেছিল। তেনালীরাম তার বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগ করে রাজপুরোহিতকে তার কুকুর মৃত্যুর মিথ্যা অপবাদ আরোপের জন্য মূল্য চুকাতে বাধ্য করেছিল।
উপদেশ: অনুরূপভাবে, কৃষ্ণ হচ্ছেন চতুর চূড়ামণি। কারোরই ভগবানকে প্রতারণা করার চেষ্টা করা উচিত নয়। যদি কেউ ভগবানকে প্রতারিত করার চেষ্টা করে তাহলে সে অনেক মূল্য চুকিয়ে বিনাশ প্রাপ্ত হবে।